Tuesday, 22 February 2022

ভারতের তুলা রফতানি বাড়ার পূর্বাভাস

ভারতের তুলা রফতানি বাড়ার পূর্বাভাস

চলতি মৌসুমে ভারতের তুলা রফতানি বাড়ার পূর্বাভাস মিলেছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় আমদানিকারক দেশগুলোর পোশাক খাতে তুলার চাহিদা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এতে এসব দেশ ভারত থেকে তুলা ক্রয়ের পরিমাণ বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ইউএসডিএর ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের (এফএএস) মুম্বাই অফিসের দেয়া এক পূর্বাভাসে দেখা গেছে, ২০২১-২২ মৌসুমে ভারত ৫৯ লাখ বেল (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড) তুলা রফতানি করতে সক্ষম হবে। ইউএসডিএর দাপ্তরিক পূর্বাভাসের তুলনায় এটি এক লাখ বেল বেশি।

চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১-২২ বিপণন মৌসুম শেষ হবে। এফএএসের মুম্বাই অফিসের প্রাক্কলন অনুযায়ী, শুধু গত বছরের ডিসেম্বরেই ভারতের তুলা রফতানি আগের মাসের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেড়ে যায়। বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, চীন ও ইন্দোনেশিয়া ছিল দেশটির প্রধান প্রধান রফতানি গন্তব্য। এর মধ্যে বাংলাদেশ ভারতের শীর্ষ তুলা ক্রেতার তকমা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশে ভারতের তুলা রফতানি বাজারের হিস্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশে। একইভাবে তুলা থেকে তৈরি সুতা ও তুলাজাত পণ্য রফতানিও ক্রমেই বাড়ছে।

দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক বাণিজ্যসংক্রান্ত তথ্যে বলা হয়, চলতি বছর জানুয়ারিতে মূল্যবানের দিক থেকে ভারতের তুলাজাত সুতা, ফ্যাব্রিকস, তৈরি পণ্য ও হ্যান্ডলুম পণ্য রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। যদিও ডিসেম্বরের তুলনায় এসব পণ্যের সম্মিলিত রফতানি ৩৩ শতাংশ কমেছে।

এদিকে জানুয়ারিতে সব ধরনের তৈরি পোশাক রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। ডিসেম্বরের তুলনায় বেড়েছে ১২ শতাংশ।

মুম্বাই এফএএস অফিসের পূর্বাভাস বলছে, ২০২১-২২ বিপণন মৌসুমে ভারতে তুলা আমদানি ১০ লাখ বেলে পৌঁছবে। ইউএসডিএর অফিশিয়াল প্রাক্কলনেও একই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সংস্থাটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে আমদানি ২১ শতাংশ বেড়েছে।

এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্থানীয় চাহিদার ৩৪ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ২৮ শতাংশ আমদানি করা হয়েছে। অর্থাৎ মোট চাহিদার বড় একটি অংশই এসেছে এসব দেশ থেকে। এছাড়া মিসর, গ্রিস ও ক্যামেরুন থেকেও কিছু তুলা আমদানি করা হয়েছে। ৬৫ শতাংশ আমদানিই এসেছে দক্ষিণ ভারতের বন্দরগুলো দিয়ে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত তুলা আমদানি করে তা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে পুনরায় রফতানি করে। ভারতের তুলা মিলগুলো এরই মধ্যে বড় পরিসরে রফতানি চুক্তি সম্পন্ন করেছে। মিলগুলোয় ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা থাকায় আমদানি বাড়ছে।

তথ্য বলছে, চলতি বাজেটে দেশটির সরকার তুলার আমদানি শুল্ক আগের মতো রেখেছে। দেশটিতে উৎপাদিত তুলার দাম বেশি থাকায় মিলগুলো আমদানির মাধ্যমেই রফতানি চাহিদা পূরণে বেশি আগ্রহী।

এফএএস মুম্বাইয়ের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২১-২২ বিপণন মৌসুমে ভারতে ২ কোটি ৭৪ লাখ বেল তুলা উৎপাদন হতে পারে। সব মিলিয়ে তুলা আবাদ হবে ১ কোটি ২১ হেক্টর জমিতে। যদিও তুলাবীজের দাম, ঊর্ধ্বমুখী উৎপাদন ব্যয়ের কারণে চাষীরা বাজারে তুলা সরবরাহ কমিয়ে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
চলতি মৌসুমে ভারতের মিলগুলোয় ২ কোটি ৬৫ লাখ বেল তুলা ব্যবহার হতে পারে। রফতানি চাহিদায় উল্লম্ফনের কারণে ব্যবহার বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

বণিক বার্তা ডেস্ক

No comments:

Post a Comment