Sunday, 31 July 2022

"আমরা আমাদের বিজনেস স্ট্র্যাটিজিতে কোন ভুল করিনি তারপরও আমরা সব হারিয়েছি" বলে নোকিয়ার সি.ই.ও তার বক্তব্য শেষ করেন।

"আমরা আমাদের বিজনেস স্ট্র্যাটিজিতে কোন ভুল করিনি তারপরও আমরা সব হারিয়েছি" বলে নোকিয়ার সি.ই.ও তার বক্তব্য শেষ করেন।  
মাইক্রোসফট কর্তৃক আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে নোকিয়ার সি.ই.ও উপরোক্ত মন্তব্য করেন। এবং বকৃতার এক পর্যায়ে নোকিয়া সকল ম্যানেজমেন্ট স্টাফ নীরব কান্নায় ভেঙে পড়েন। 
নোকিয়া ব্র্যান্ডকে নতুন করে চিনিয়ে দেওয়ার কোন দরকার নেই। এক সময় টেলিকমিউনিকেশনের রাজত্বে একক আধিপত্য বিস্তারকারী নোকিয়া কোম্পানি এখন বিলুপ্তির পথে। তাদের তৈরি বাটন সেট মিলিয়ন মিলিয়ন পিস বিক্রি হয়েছে আজ থেকে ৮-১০ বছর আগেও। তাহলে কি এমন হোল যে, এতবড় জায়ান্ট সেলফোন প্রডিউসিং ব্র্যান্ড হঠাৎ করে মুখ থুবড়ে পড়ল? 
মুল সমস্যা ছিল প্রযুক্তিকে এডোপ্ট করা। আপনি ভাবছেন আপনার প্রোডাক্ট এনালগ হলেও গুনগত মান অন্যান্য ডিজিটাল পণ্য থেকে ভাল তাই আপনি একাই মার্কেটে রাজ কর্মতে পারবেন। এটা ভুল। মানুষ আধুনিকতা পছন্দ করে। মানুষ এখন স্পিড পছন্দ করে। চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা সিকিউর হলেও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণে মানুষ এখন আর চিঠি আদান প্রদান করেনা। ইমেইলেই কাজ করে। কারণ এটা ফাস্ট। নোকিয়া ঠিক এই ভুলটাই করেছে। তারা চিঠির যুগ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ঠিক সময়। অর্থাৎ যেখানে অন্যান্য ব্র্যান্ড বিশেষ করে আইফোন , স্যামসাং অলরেডি এনড্রোয়েড ফোন বাজারে নিয়ে এসেছে সেখানে নোকিয়া মাইক্রোসফটের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তার লুমিয়া সেটকে আইওএস এনড্রোয়েড করার পরিবর্তে মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেমেই রেখে দিয়েছি।     

পরিশেষে আমাদের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কিছু এড করতে চাই। আমরাও যদি নতুন নতুন প্রযুক্তি এপ্লাই করার পরিবর্তে পুরাতন প্র্যাকটিস এবং ধ্যান ধারনা নিয়ে আমাদের ফ্যাক্টরি রান করাতে চাই আমাদেরকেও এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যেতে হবে। এখন বিজনেসের স্ট্র্যাটিজি আর প্রফিট বেজ না। এখন স্ট্র্যাটিজি কস্ট বেজ। অর্থাৎ আপনি প্রডিউসিং কস্ট যত কম করবেন তত বেশী প্রফিট পাবেন। কস্টের উপর ভিত্তি করে আপনার প্রফিট মার্জিন দাঁড় করাতে হবে।  
 প্রতিনিয়ত নিজেকে ডেভেলপ করতে হবে নতুন নতুন জিনিস শেখার মাধ্যমে। বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপ করুন। সফট স্কিল, হার্ড স্কিল যেকোন স্কিল অর্জন করতে থাকুন এবং এটা কন্টিনিউয়াশলি। থেমে যাওয়া যাবেনা। লীনের কোর্স করুন, সিগমার কোর্স করুন, জিএসডি করুন, এক্সেলের কোর্স করুন । এক কথায় শিখতেই থাকুন।  

লেখক স্বত্ত্বঃ- Mamun Rezwan

Sunday, 24 July 2022

নতুন জিন্স কেনা পরিবেশের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর

🔰ব্রিটিশ এক সমীক্ষায় প্রকাশ করা হয়েছে যে, নতুন জিন্স কেনা পরিবেশের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর যেহেতু CO2 এর ভালো একটা পরিমান তৈরী হচ্ছে জিন্সের প্রডাকসনের মধ্যে যা সম্পূর্ন পৃথিবীকে ২.৩৭২ বার ঘুরার সমান অথবা একটি পেট্রোল গাড়ি ২১ বিলিয়ন মাইলেরও বেশী ঘুরে আসার সমান।

🔰ব্রিটিশ নন প্রফিট অর্জানাইজেশন “অক্সফাম” জিন্স সম্পর্কে কার্বন ফুট প্রিন্ট প্রকাশ করে এবং তাদের আসন্ন সেকেন্ড হ্যান্ড সেপ্টেম্বর ক্যাম্পেইন এর জন্যে সবাইকে পরিবেশ বাচাতে সেকেন্ড হ্যান্ড জিন্স কিনতে উৎসাহিত করছে।
সোর্স- টেক্সটাইল টু ডে

সুইমওয়ার রপ্তানিতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থান দখল করে আছে বাংলাদেশ।

🔰 OTEXA এর রিপোর্ট অনুযায়ী জানুয়ারি - মে ২০২২ প্রিয়ডে আমেরিকার বাজারে সুইমওয়ার এর ডিমান্ড বেড়েছে ৩৬.৩৬%। 

🔰 দেশটিতে সুইমওয়ার রপ্তানিতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থান দখল করে আছে বাংলাদেশ। 

১. চায়না। (২৮৫.৭৪ মিলিয়ন $)
২. ভিয়েতনাম (২৭০.৯৫ মিলিয়ন $)
৩. ইন্দোনেশিয়া (৯৭.৫০ মিলিয়ন $)
৪. বাংলাদেশ (৫৯.২৪ মিলিয়ন $)

সোর্স - এপারেল রিসোর্স

বায়িং হাউজের কর্মকর্তা থেকে শিল্প গ্রুপের মালিক। আরডিএম গ্রুপের বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

বায়িং হাউজের কর্মকর্তা থেকে শিল্প গ্রুপের মালিক 

আরডিএম গ্রুপের বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

১৯৯৬ সালে স্নাতক পাসের পরদিনই একটি বায়িং হাউজে চাকরি নেন রাকিবুল আলম চৌধুরী। 

প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন থেকে রপ্তানি প্রক্রিয়ার সব ক্ষেত্রেই কাজ শিখেছেন হাতে কলমে। চাকরির পাশাপাশি স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনাও চালিয়ে গেছেন সমানতালে।

চাকরির বেতনের জমানো ৯ লাখ টাকা এবং পরিবারের ঋণ ১৮ লাখ সহ মোট ২৭ লাখ টাকা মূলধন নিয়ে ২০০২ সালের আগস্টে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় গার্মেন্টস কারখানা দেন। 

৮ হাজার ৫০০ স্কয়ার ফিটের এইচকেসি অ্যাপারেলস নামের ওই কারখানায় ৩৬টি মেশিন ও ৭৮ জন কর্মী নিয়ে রাকিবুল আলম চৌধুরীর গার্মেন্ট শিল্পে পথচলা শুরু হয়। 

সেই থেকে গত ২০ বছরে একে একে গড়ে তুলেছেন শতভাগ রপ্তানিমুখী ৬ টি কারখানা। প্রায় ৬৩০০ জন কর্মী কাজ করছে আরডিএম গ্রুপের এসব কারখানায়। কারখানার উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকায়। 

গার্মেন্টস ব্যবসার পাশাপাশি আইটি এবং কৃষি খাতে ব্যবসা রয়েছে রাকিবুলের। 

আরডিএম গ্রুপের বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

কঠোর পরিশ্রম এবং এই শিল্পে একাগ্রতার কারণে এতদূর আসতে পেরেছেন বলে মনে করেন রাকিবুল। একই সাথে 

মনে করেন, কারখানায় নিয়োজিত প্রতিটি শ্রমিক কর্মচারীর আন্তরিকতা তাকে সফলতা এনে দিয়েছে। 

"তাই আমি প্রতিটি কর্মীকে আমার পরিবারের সদস্য মনে করি", বলেন তিনি। 

২০০২ সালে প্রথম কারখানা করার পর আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। একে একে বাড়তে থাকে রাকিবুলের কারখানা। 

 ২০০৭ সালে আরডিএম এপারেলস নামে আরেকটি কারখানা করেন রাকিবুল। এখানে ৮০ লাখ টাকা বিনিয়োগে ৩৯ হাজার স্কয়ার ফিটের কারখানায় ১২০ টি মেশিনে ৩৫০ জন কর্মী কাজ শুরু করে।

এরপর ২০০৯ সালে আতুরার ডিপো এলাকায় কম্বাইন্ড অ্যাপারেলস নামে ৪২ হাজার বর্গফুটের একটি পুরাতন কারখানা টেকওভার করেন।  

এর তিন বছর পর ২০১২ সালে সামার্ট ফ্যাশন নামে ২৭ হাজার বর্গফুটের আরেকটি কারখানা করেন। ১৮০টি মেশিন ও ৪০০ কর্মী নিয়ে এ কারখানার যাত্রা শুরু হয়। 

এরপর ২০১৮ সালে ইউনি গার্মেন্টস নামে আরেকটি কারখানা টেকওভার করেন রাকিবুল। ১.৬ একর নিজস্ব জায়গার এই কারখানায় ১১০০ মেশিনে ২৪০০ কর্মী কাজ করে।

বর্তমানে আরডিএম গ্রুপের ৬ টি কারখানায় নিটওয়্যার জাতীয় আউটার ওয়্যার, লাইট ওভেন পণ্য উৎপাদিত হয় যা আমেরিকা ও ইউরোপে রপ্তানি হয়। এর মধ্যে আমেরিকায় ৭০% এবং ৩০% ইউরোপে। 

মাঝখানে কিছুদিন মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হয়েছিলো কিন্তু করোনার কারণে বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের সাথে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

এই শিল্প গ্রুপটি মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে গার্মেন্টস পল্লীতে ৬ একর জমি বরাদ্দ নিয়েছে। যেখানে একটি টেক্সটাইল গড়ে তোলা হবে। এখানে বিনিয়োগ হবে ২০০ কোটি টাকা।

রাকিবুলের কৃষি খামারে বর্তমানে ১৩২ টি গরু রয়েছে। এই খাতে বিনিয়োগ ৬ কোটি টাকা। 

এছাড়া আইটি খাতে তিনি ডাটা এক্সচেঞ্জ নামে একটি কোম্পানি খুলেছেন। 

আরডিএম গ্রুপের বর্তমানে ৫ টি বন্ড লাইসেন্স রয়েছে। আরো একটি লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

চ্যালেঞ্জ কী? 

এতটুকু পথ পাড়ি দিতে কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হতে হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ'র এই সহ সভাপতি বলেন, চট্টগ্রামে আমরা সবচেয়ে বেশি সমস্যা মোকাবেলা করছি মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টে দক্ষ জনবল নিয়ে। গ্রিন ফ্যাক্টরি এবং কমপ্লাইন ফ্যাক্টরি করার জন্য কমপ্লাইন্সের লোকবলের অভাব। এছাড়া মার্চেন্ডাইজিংয়ে গত দুই বছর ধরে দক্ষ জনবল গড়ে উঠলেও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার পদে এখনো সংকট রয়ে গেছে।

রাজধানী ঢাকা সহ আশপাশের জেলাগুলোতে যেভাবে সহজেই ব্যাংক ঋণ পাওয়া যায় চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা সেভাবে পায়না। 

"চট্টগ্রামে রিজিওনাল ম্যানেজার ছাড়া ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বসেনা।চট্টগ্রামে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা নতুন উদ্যোক্তাদের বড় অংকের ঋণের কোন ফাইল ঢাকায় পাঠানোর সাহস করেনা। আমি নিজেই একটি গার্মেন্টস টেইকওভার করার সময় এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছি।"

এ কারণে চট্টগ্রাম শহরে ভালো কোন উদ্যোক্তা উঠে আসছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

তিনি আরো বলেন, গত আড়াই বছর ধরে চট্টগ্রোমের কোন কারখানা গ্যাস সংযোগ পায়নি। অথচ অন্যান্য খাতগুলো পাচ্ছে। এক সময় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও ২০-৩০ লাখ টাকা দিয়ে গার্মেন্টস কারখানা করতে পারতো। কিন্তু এখন ৩০ কোটি টাকা দিয়েও গার্মেন্টস কারখানা করা কঠিন।

চট্টগ্রামে পোষাক খাতের পিছিয়ে পড়ার আরেকটি বড় কারণ জমির অধিক মূল্য । বাণিজ্যিক রাজধানী এবং বন্দর এলাকা হওয়ার কারণে দেশের অন্য জেলার শহরের তুলনায় চট্টগ্রাম শহরের জমির দামে বিশাল ব্যবধান। ঢাকায় শিল্প কারখানা যেভাবে আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠছে চট্টগ্রামে এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি।

তৈরির পোশাকের উজ্জল ভবিষ্যৎ 

পোষাক খাতের সম্ভবনা নিয়ে রাকিবুল বলেন, আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশের পোষাক খাতে প্রচুর পরিমানে অর্ডার আসবে। 

"সরকারের কাছে একটিই অনুরোধ, যদি লজিস্টিক সাপোর্ট পাই তাহলে চীন থেকে যেসব ব্যবসা বেরিয়ে আসছে সেগুলো আমরা নিজেদের দেশে নিয়ে আসতে পারবো। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে মূখ্য ভুমিকা পালন করতে হবে।"

দেশে এখনো ৯০ শতাংশ ফ্রেব্রিক চীন থেকে আমদানি করতে হয়। বিকল্প মার্কেট এখনো তৈরি হয়নি।

"২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে নিজেরা সক্ষমতা অর্জন করতে পারি তাহলে চীনের মুখাপেক্ষি হতে হবে না", বলেন তিনি।

Saturday, 23 July 2022

আমেরিকান ফ্যাশন শিল্প: আগামী ২ বছরে চীন, ভিয়েতনামের চেয়েও বেশি অর্ডার পাবে বাংলাদেশ

আমেরিকান ফ্যাশন শিল্প: আগামী ২ বছরে চীন, ভিয়েতনামের চেয়েও বেশি অর্ডার পাবে বাংলাদেশ

মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলো যেসব দেশ বা অঞ্চল থেকে আগামী দুই বছরে তাদের সোর্সিং ভ্যালু বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে সেসব দেশের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ভারত, এরপর সিএএফটিএ-ডিআর অঞ্চল। এক্ষেত্রে তৃতীয় অবস্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ।

ইউএসএফআইএ ২০২২ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্কিং স্টাডি অনুসারে, অর্ধেকেরও বেশি মার্কিন পোশাক নির্বাহী আগামী দুই বছরে চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া এবং অন্যান্য প্রতিযোগীদের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে সোর্সিং বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

ইউনাইটেড স্টেটস ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসএফআইএ) এর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, প্রায় ৫৫ শতাংশ ইউএস অ্যাপারেল এক্সিকিউটিভ ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সোর্সিং বাড়ানোতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এরমধ্যে প্রায় ৩ শতাংশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সোর্সিং বাড়ানোর আশা করেন।

মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলো যেসব দেশ বা অঞ্চল থেকে আগামী দুই বছরে তাদের সোর্সিং ভ্যালু বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে সেসব দেশের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ভারত, এরপর সিএএফটিএ-ডিআর অঞ্চল। এক্ষেত্রে তৃতীয় অবস্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ।

সিএএফটিএ-ডিআর বা ডোমিনিকান রিপাবলিক-সেন্ট্রাল আমেরিকা এফটিএ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ছোট উন্নয়নশীল অর্থনীতির গ্রুপ - কোস্টারিকা, এল সালভাদর, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া এবং ডোমিনিকান রিপাবলিকের মধ্যে প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি।

এই তালিকায় বাংলাদেশের পরই রয়েছে মেক্সিকো। মার্কিন ক্রেতাদের সোর্সিং বাড়ানোর পরিকল্পনায় পঞ্চম অবস্থানে যৌথভাবে আছে ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনাম। 

প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, এই গবেষণার প্রতিবেদনটি যৌক্তিক।

তিনি বলেন, মার্কিন ক্রেতারা নিশ্চিত যে বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে মৌলিক পণ্য ছাড়াও অন্যান্য গার্মেন্টজাতীয় পণ্য উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশ থেকে নিটওয়্যার পণ্যের জন্য প্রচুর অর্ডার দিচ্ছে। ফলে গত কয়েক মাসে এই বাজারে বাংলাদেশের আরএমজি পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫০ শতাংশের বেশি।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু ভারতের নিজস্ব কাঁচামাল রয়েছে, তাই তারা তুলনামূলক কম দামে কাপড় রপ্তানি করতে সক্ষম। এ কারণে তারা ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।

৩০টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড, খুচরা বিক্রেতা, আমদানিকারক এবং পাইকারি বিক্রেতাদের উপর চালানো সমীক্ষাই হলো ইউএসএফআইএ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্কিং স্টাডি। এরমধ্যে দেশটির কয়েকটি বৃহত্তম ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারাও রয়েছে।

সমীক্ষায় ৮৫ শতাংশেরও বেশি উত্তরদাতা চীন থেকে সুতি পোশাক আমদানি কমানোর পরিকল্পনা করছেন। এদিকে ৪৫ শতাংশ বলছেন, তারা নন-কটন পোশাক আমদানি আরও কমিয়ে দেবেন।

মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর জন্য শীর্ষস্থানীয় সোর্সিং বেস এশিয়া।

২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি পোশাক সোর্সিং গন্তব্যের তালিকায় থাকা শীর্ষ দশের বেশিরভাগই এশিয়া ভিত্তিক। এরমধ্যে প্রথমেই রয়েছে চীন (৯১%); এরপর ভিয়েতনাম (৮৮%), বাংলাদেশ (৮৪%) এবং ভারত (৭২%)। 

'চীনের এক্সপোজার' কমানো মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর সোর্সিং বৈচিত্র্যকরণ কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এক-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতা এই বছর চীন থেকে ১০ শতাংশেরও কম পোশাক পণ্যের সোর্সিং এর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।

এছাড়াও, ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা ২০২২ সালে চীনের চেয়ে ভিয়েতনাম থেকে বেশি উৎসের পরিকল্পনা করছে।

ফ্যাশন ব্র্যান্ড, খুচরা বিক্রেতারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতে সাপ্লাই চেইন বিঘ্নিত হওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রায় সব উত্তরদাতা বলেন, শিপিং বিলম্ব এবং সাপ্লাই চেইন ব্যাঘাত ২০২২ সালে তাদের শীর্ষ ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি।

৯৫ শতাংশেরও বেশি উত্তরদাতার মতে, উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএফএলপিএ) বাস্তবায়ন তাদের কোম্পানির সোর্সিংকে প্রভাবিত করবে।

বেশিরভাগ উত্তরদাতার (৯২ শতাংশের বেশি) চীন ছাড়া এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে পোশাকের উৎস কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। 

প্রায় ৬০ শতাংশ উত্তরদাতা ইউএফএলপিএ এর প্রতিক্রিয়ায় 'এশিয়ার বাইরে নতুন সোর্সিং গন্তব্য খুঁজবেন' বলে জানান।

ইউএসএফআইএ 'নেতৃস্থানীয়' মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর ৩৪ জন নির্বাহীর একটি সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে তাদের নতুন প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এরমধ্যে ৮১ শতাংশ কোম্পানিতে এক হাজারেরও বেশি কর্মচারী রয়েছে। 

সমীক্ষার অংশগ্রহণকারী প্রায় ৭০ শতাংশ খুচরা বিক্রেতা, ৬৭ শতাংশ আমদানিকারক এবং পাইকারী বিক্রেতা; বাকি ৪০ শতাংশ ব্র্যান্ড। 

এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে এ সমীক্ষা চালায় ইউএসএফআইএ।