ভারতের বিপক্ষে আবারো বাংলাদেশের বিজয়😍
অবশেষে মসলিনকে বাংলাদেশের জিআই হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হলো😍যা ভারত নেয়ার সবরকম চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।
মসলিন বিশেষ এক প্রকার তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুতকৃত সূতা দিয়ে বয়ন করা এক প্রকারের অতি সূক্ষ্ম কাপড়বিশেষ।
এটি ঢাকাই মসলিন নামেও সুবিদিত ছিলো কিন্তু তার জিআই বাংলাদেশের ছিলো না এতোদিন।যেখানে ঢাকার নাম জড়িত তা অবশ্যই বাংলাদেশের হবে এটাই মূল কারণ আর সেই হিসাবের জোরে পেয়েছে এই স্বীকৃতি। ভারত বাংলা হিসাবে এর স্বীকৃতি আদায় করতে সবরকম কাগজপত্র জমা দিয়েছিলো।
ফুটি কার্পাস নামক তুলা থেকে প্রস্তুত অতি চিকন সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি করা হত। চড়কা দিয়ে কাটা, হাতে বোনা মসলিনের জন্য সর্বনিম্ন ৩০০ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হত যার ফলে মসলিন হত কাচের মত স্বচ্ছ। এই মসলিন রাজকীয় পোশাক নির্মাণে ব্যবহার করা হত। মসলিন প্রায় ২৮ রকম হত যার মধ্যে জামদানী এখনও ব্যাপক আকারে প্রচলিত। নানা কারণে আঠারো শতকের শেষার্ধে বাংলায় মসলিন বয়ন বন্ধ হয়ে যায়।
যে কটি পণ্য বিশ্বে বাংলাদেশকে পরিচিত করেছে তার একটি মসলিন। মসলিনেরই টিকে যাওয়া একটি ধরন জামদানি। ঐতিহ্যগতভাবে জামদানি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য। দেশে-বিদেশে এর গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণও রয়েছে।
এত কিছুর পরও ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ২০০৯ সালে জামদানিকে তাদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধন করেছে। এর নাম দিয়েছে ‘উপাদ্দা জামদানি’।গত ৫ আগস্ট জিআই নিবন্ধনের শর্ত হিসেবে বাংলাদেশের জামদানির জন্ম, উৎপাদন, বিস্তার এবং বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর তাদের নিজস্ব জার্নালে ২৬ পৃষ্ঠার একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে। ৫ অক্টোবর প্রবন্ধ প্রকাশের দুই মাস পেরিয়েছে। আশঙ্কা ছিল ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের জামদানির জিআই নিয়ে আপত্তি উঠতে পারে। তা হয়নি। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে এর আগে ‘উপাধ্যায় জামদানি’ নামের একটি শাড়ির নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু শুধু ‘জামদানি’ নামে নিবন্ধন চেয়ে কেউ দাবি করেননি।ফলে বাংলাদেশ জামদানী লাভ করে জিআই পন্য হিসাবে।আর এখন মসলিন পেলো।
এর আগে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত পন্য গুলো হল -
১ঃ জামদানি
২ঃ ইলিশ
৩ঃ ক্ষিরশাপাতি আম
আর এখন ৪ঃ মসলিন।
প্রায় ২৮ প্রকারের মসলিনের মধ্যে জামদানি এখনও ব্যাপক আকারে প্রচলিত। নানা কারণে আঠারো শতকের শেষার্ধে বাংলায় মসলিন তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। কথিত আছে যে মসলিনে তৈরি করা পোশাকসমূহ এতই সূক্ষ্ম ছিল যে ৫০ মিটার দীর্ঘ মসলিনের কাপড়কে একটি দিয়াশলাই বাক্সে ভরে রাখা যেত।
জিআই হচ্ছে, কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়া ও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। র্সাধারণ কথায়, কোনো একটি নির্দিষ্ট পণ্য একটি দেশের মালিকানা বা মেধাস্বত্ব হলো ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই)।
গবেষণায় উঠে এসেছে, বিশ্বব্যাপী ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের চাহিদা যেমন ভালো, তেমনি এর জন্য বাড়তি দাম দিতেও রাজি থাকেন ক্রেতারা। বিভিন্ন দেশে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি দাম দিয়ে এসব পণ্য কেনেন ক্রেতারা। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জিআই পণ্য নিবন্ধিত হলে ওই পণ্যকে ঘিরে প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগও আসে। এসব সুযোগ নিতে পারে বাংলাদেশও।
No comments:
Post a Comment